হ্যাকিং কি? হ্যাকার কারা ? আসুন জেনে নেই হ্যাকারদের সম্পর্কে

যেকোনো ধরনের বিজনেস বা কোম্পানি চালানর জন্য কিছু দরকার হোক আর না হোক কম্পিউটার অবশ্যই দরকার। আবার শুধু কম্পিউটার হলেই হবে না। এই কম্পিউটারকে নেটওয়ার্কের সাথে কানেক্টেড থাকতে হবে। আর যখনই কম্পিউটার নেটওয়ার্কের সাথে কানেক্টেড থাকে তখনই হ্যাকাররা অ্যাটাক করতে পারে।এখন কথা হোল হ্যাকিংটা আসলে কি?

হ্যাকিং কি তা ভালভাবে বুঝতে হলে আগে আপনাকে বুঝতে হবে হ্যাকার কারা এবং তারা কিভাবে কাজ করে। অনেকেরই হ্যাকারদের সম্পর্কে কোন ধারণাই নাই। তাই তারা যেকোনো সময় হ্যাকিং এর শিকার হতে পারে। আবার কোন সিস্টেম হ্যাক করার জন্য একজন হ্যাকারকে অনেক বিষয় সম্পর্কে জানতে ও বুঝতে হবে। সিস্টেমগুলো এখন অনেক শক্তিশালী।

হ্যাকিং কি?

কম্পিউটারের নিরাপত্তা ভেঙ্গে যখন কেউ কম্পিউটারের ভিতরে ঢুকে পরে সেটাই মূলত কম্পিউটার হ্যাকিং। আর যে এই কাজ করে তারাই হ্যাকার। নেটওয়ার্ক কানেক্টেড সব ধরনের কম্পিউটারই হ্যাকিং এর শিকার হতে পারে। তবে নেটওয়ার্ক কানেক্টেড না হলে কোন কম্পিউটার হ্যাক করতে হলে হ্যাকারকে কম্পিউটারে ফিজিক্যাল অ্যাক্সেস থাকতে হবে। আর যদি কম্পিউটার নেটওয়ার্কে কানেক্টেড থাকে তাহলে হ্যাকার কম্পিউটারের সিকিউরিটি হোলকে কাজে লাগিয়ে কম্পিউটার নিজের আয়ত্তে নিয়ে নেয়।

হ্যাকার কারা?

একজন হ্যাকার সেই যে কোন কম্পিউটার বা নেটওয়ার্কের দুর্বল জায়গা খুঁজে বের করে এবং না ধরনের পদ্ধতি ব্যবহার করে সেই দুর্বল জায়গায় আক্রমণ করে। শুনতে অনেক সহজ মনে হলেই একজন হ্যাকারকে অনেক বিষয়ে দক্ষ হতে হয়। কারণ এখনকার বেশিরভাগ সিস্টেম অনেক বেশি শক্তিশালী। দিন দিন কম্পিউটারের নিরাপত্তা ভেঙ্গে ঢোকা আরো বেশি কঠিন হয়ে পরছে। কারণ হ্যাকাররা যেমন বিভিন্ন কম্পিউটার হ্যাকিং এর চেষ্টা চালাচ্ছে তেমনি অনেক সিকিউরিটি বিশেষজ্ঞ এই সব কম্পিউটারের দুর্বল জায়গা খুঁজে বের করে সেগুলো ঠিক করতে ব্যস্ত।

হ্যাকিং কি তা ভালভাবে বুঝতে হলে আগে আপনাকে বুঝতে হবে হ্যাকার কারা এবং তারা কিভাবে কাজ করে। অনেকেরই হ্যাকারদের সম্পর্কে কোন ধারণাই নাই। তাই তারা যেকোনো সময় হ্যাকিং এর শিকার হতে পারে। আবার কোন সিস্টেম হ্যাক করার জন্য একজন হ্যাকারকে অনেক বিষয় সম্পর্কে জানতে ও বুঝতে হবে। সিস্টেমগুলো এখন অনেক শক্তিশালী।

হ্যাকারদের মধ্যেও অনেক ভাগ আছে। তাদের কাজ অনুযায়ী তাদের ভাগ করা হয়। নিচে সেগুলো দেয়া হলোঃ

এথিকাল হ্যাকার(White Hat Hacker)

যখন কোন হ্যাকার কোন সিস্টেমে প্রবেশ করে সেই সিস্টেম এর দুর্বল দিকগুলো খুঁজে বের করে এবং সেগুলো ঠিক করে তখন সেই হ্যাকারকে বলা হয় এথিকাল হ্যাকার। অনেক সময় এথিকাল হ্যাকাররা কম্পিউটারের মালিক এর অনুমতি নিয়ে কাজ করে। আবার অনেক কোম্পানি এথিকাল হ্যাকারদের হায়ার করে সিস্টেম এর খুঁত খুঁজে বের করার জন্য।

ক্র্যাকার(ব্ল্যাক হ্যাট হ্যাকার)

যখন কেউ কোন কম্পিউটারের ক্ষতি করার জন্য কম্পিউটারের নিরাপত্তা ভেঙ্গে ঢুকে পরে তখন তাদের ক্র্যাকার বলা হয়। ক্র্যাকার শুধু কম্পিউটারের নিরাপত্তাই ভাঙ্গে না তারা বিভিন্ন সফটওয়্যারও ক্র্যাক করে। বেশিরভাগ সময় ক্র্যাকররা বিভিন্ন কম্পিউটার থেকে অনেক ডাটা চুরি করে।

গ্রে হ্যাট হ্যাকার

অনেক হ্যাকার অনেক সময় বিভিন্ন সিস্টেম হ্যাক করে তা ঠিক করে দেন। আবার এড়াই বিভিন্ন সিস্টেমের অনেক ক্ষতি করে। তাই এই ধরনের হ্যাকার রা হোয়াইট হ্যাট হ্যাকার এবং ব্ল্যাক হ্যাট হ্যাকারদের মাঝা মাঝি অবস্থান করে।

স্ক্রিপ্ট কিডল

যখন কেউ অন্য হ্যাকারদের তৈরি সফটওয়্যার বা টুল ব্যবহার করে কোন সিস্টেম হ্যাক করে বা কোন নেটওয়ার্ক এর অ্যাক্সেস নিয়ে নেয় তারাই স্ক্রিপ্ট কিডল।

সাইবার ক্রাইম কি?

যখন কোন কম্পিউটার বা নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে কোন ধরনের অবৈধ কাজ করা হয় তাই সাইবার ক্রাইম। যখন ভাইরাস তৈরি করে তা ছড়িয়ে দেয়া হয় তা সাইবার ক্রাইমের আওতায় পরে। সাইবার ক্রাইম অনেক রকমের হয়। যেমন যদি কেউ নিজের লাভের অন্য কম্পিউটার সিস্টেম হ্যাক করে। আবার যদি কেউ কার ব্যক্তিগত বিষয় যেমন ইমেইল অ্যাড্রেস, ফোন নাম্বার ইত্যাদি ব্যবহার কারও ক্ষতি করে তবে তা সাইবার ক্রাইম এর আওতায় পরে। অনেকেই বিভিন্ন সফটওয়্যারের কপিরাইটেড ভার্সন ব্যবহার করি। এগুলোও একধরনের সাইবার ক্রাইম।

 

এথিকাল হ্যাকিং কি?

কম্পিউটারের দুর্বল জায়গা খুঁজে বের করে তা ঠিক করাই এথিকাল হ্যাকারদের প্রধান কাজ। তবে এথিকাল হ্যাকাররা সবসময় কম্পিউটার বা নেটওয়ার্কের মালিকের থেকে অনুমতি নিয়ে এসব কাজ করে। কারণ অনুমতি না নিয়ে যেকোনো ধরনের হ্যাকিং অপরাধ। যেকোনো ধরনের কোম্পানি চালাতে হলে অবশ্যই একটি ভাল নেটওয়ার্ক প্রয়োজন। আর ভাল নেটওয়ার্ক মানেই অনেক হ্যাকারা ক্ষতি করা উদ্দেশে নেটওয়ার্ক হ্যাক করার চেষ্টা করে। আর এই ধরনের হ্যাকিং প্রতিরোধ করার জন্যই এথিকাল হ্যাকারদের প্রয়োজন। এথিকাল হ্যাকাররা সিস্টেমকে হ্যাকিং থেকে প্রতিরোধ করতে কাজ করে। এথিকাল হ্যাকিং বৈধ তবে অবশ্যই যে সিস্টেম এর মালিক তার অনুমতি নিয়ে কাজ করতে হবে। এথিকাল অনেক সময়ই নিজের থেকে বিভিন্ন সিস্টেম এর খুঁত খুঁজে বের করেন এবং অজান্তেই তা ঠিক করে দেন।

হ্যাকারদের থেকে কিভাবে নিজেকে সুরক্ষিত রাখবেন?

প্রধানত আপনি যদি ইন্টারনেট ব্যবহার করেন কিন্তু ইন্টারনেটে সিকিউরিটি সম্পর্কে ভালভাবে না জানেন তবে আপনি হ্যাকিং অ্যাটাক এর সম্মুখীন হতে পারেন। আবার আপনি যদি আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বিভিন্ন সাইবার ক্যাফে তে চালান এবং ঠিকভাবে লগ আউট না করেন, তাহলেও আপনার ফেসবুক আইডি হ্যাক হয়ে যেতে পারে। তাই হ্যাকিং থেকে বাঁচার জন্য অবশ্যই সাবধান থাকতে হবে।

অনেক সময় ফেসবুকে অনেকেই অনেক লিঙ্ক পাঠায় এসব লিঙ্কে কি আছে তা না জেনে ঢুকবেন না। এটা সম্পর্কে অনেকেই জানেন তাই এই পদ্ধতি অর্থাৎ ফিশিং এর ব্যবহার অনেক কমে গেছে। তবে তাও আপনাকে সাবধান থাকতে হবে। আর যারা কম্পিউটার ব্যবহার করেন তারা ভালমানের একটি অ্যান্টিভাইরাস ব্যবহার করবেন। তাহলে এসব হ্যাকিং এর থেকে অনেক ক্ষেত্রেই সুরক্ষিত থাকতে পারবেন। এবং যদি নিজের কম্পিউটার ছাড়া অন্য কথাও আপনি আপনার ফেসবুক বা জিমেইল ব্যবহার করে থাকেন তাহলে অবশ্যই লগ আউট করে আসবেন।

বি.দ্রঃ এই টিউনটি শুধুমাত্র মানুষকে হ্যাকিং সম্পর্কে জানানোর জন্য। এর কোন অংশ ব্যবহার করে কেউ ক্ষতিগ্রস্থ হলে আমি বা টেকটিউনস দায়ী থাকবে না। আজ এ পর্যন্তই। টিউনটি কেমন লাগল তা টিউমেন্ট এর মাধ্যমে জানাবেন। সবাই ভাল থাকবেন। সুস্থ থাকবেন।

Level 2

আমি আশরাফুল ফিরোজ। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 9 বছর 8 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 77 টি টিউন ও 35 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 6 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস