বাংলাদেশি একজন তরুন হ্যাকারের আত্মকাহিনী

টিউন বিভাগ অল্টারিং
প্রকাশিত
জোসস করেছেন

আসসালামু আলাইকুম,

আজকে আমি আপনাদের সাথে বাংলাদেশি একজন তরুন হ্যাকারের আত্মকাহিনী শেয়ার করবো। আমার কন্টেন্টটি মূলত তার ফেইসবুক পেজ এর স্টোরি থেকে কপি করা (অনুমোদিত)।

ভাইয়ের নাম সম্ভবত "নিরব"। আমি অনেক খুঁজেও তার ফেইসবুক প্রোফাইলটা পাইনি শুধু পেইজের সন্ধান পেয়েছি।

এইটা পেইজের লিঙ্ক https://www.facebook.com/Nirob2904XR/

হ্যাকার.!
শব্দটা কেমন না? শুনলে যেনো কেমন একটা অনুভূতি হয়। অনেকেরই শখ জাগে হ্যাকার হতে। আমি কোনো শখে হ্যাকার হইনি। যখন ক্লাস নাইনে পড়ি, হাতে প্রথম একটা ভাল স্মার্ট ফোন আসে, তবে ইন্টারনেট ভাল ছিল না। দ্বিতীয় প্রজন্মের নেটওয়ার্ক অর্থাৎ (2G)। সেই থেকেই শুরু আমার পথচলা। আমার হ্যাকিং দক্ষতা কিন্তু তখন ও শুন্য, জানি কেবল ফিসিং এর মত চিটিং। তবে প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ আর আর সার্ভার ম্যানেজমেন্ট এর উপর আমার নেশা ছিল খুব। আমার প্রথম হ্যাকিং শুরু হয় ফেসবুক দিয়েই। এইচ টি এম এল আর ফ্রি হোস্ট, ফ্রি ডোমেইনে কত প্রকার আর কত লোভনীয় পেজ বানিয়ে একাউন্ট হ্যাক করতাম। শ্ত্রু আমার ক্ষতি করলে আমি তার ক্ষতি করতাম অনলাইনে, কারো সাথে ঝামেলা হলেই আমি ফেইক একাউন্ট দিয়ে চ্যাট করে তাকে ফিসিং এ ফাসিয়ে দিতাম। বেশ কিছুদিন এভাবে চলার পর বন্ধুরা আমাকে ভয় পেতে শুরু করলো। কেউ বা টিপস নিতে আসত, কেউ বা বলত আমার একাউন্ট এ এমন সিকিউরিটি দিয়ে দাও যাতে আর হ্যাক না হয়। আমিও ভালই মজা পেতাম বিষয়টাতে।

ক্লাস নাইনে  কোনো এক তুচ্ছ কারণবশত ফেসবুক নিষিদ্ধ হলো আমাদের স্কুলে। শিক্ষকদের এর হাতে সবাইকেই প্রায় মার খেতে হলো। আমি বানিয়ে ফেললাম "XTBook"  নামের একটি স্যোশাল সাইট তাও আবার ওয়াপকা তে।

বয়সটাই ছিল উত্তেজনার,
শুনতে খারাপ হলেও বলছি সাইটটি ইউস করা হতোই শুধুমাত্র অবৈধ কাজে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল; প্রশ্ন ফাস, বদমেজাজি স্যার ম্যাডামদের নিয়ে ট্রল ইত্যাদি। প্রশ্ন ফাঁস এর সব দায় আমাকে দেওয়া হলেও বাকি কাজগুলো থেকে দূরেই থাকতাম। তার আমি প্রধান কারণ আমি এডমিন! সাগর কে ভূলব না, বন্ধু এতোটা সাপোর্ট দিয়েছে। বেশ নাম ও কামিয়েছিলাম তখন এলাকায়। এই আরো একধাপ এগিয়ে যাওয়া ছিল।

তখন দশম শ্রেনীতে উঠলাম মাত্র, একটা ব্যাবসা শুরু করি ৫০০ টাকা হাতে নিয়ে।
সেই ব্যবসা অনেক ভাল চলে, সেটাও অনলাইন ভিত্তিক ছিল। ০৯৬ কোড এর বিটিসিএল নাম্বার এর এজেন্ট ছিলাম আমি। বিক্রয় ডট কম এ ২০-৫০ টা জিমেইল খুলে একাউন্ট করেছিলাম। দিনে অনেক কল পেতাম আর বিক্রি করতাম। ক্রয়মূল্য ৫৫ টাকা আর বিক্রয় মূল্য ছিল ২০০ টাকা। ১০০ তে ১৪৫ ই লাভ।

স্টার জলসার উপর রাগ করে স্টার জলসাকে আক্রমন করে বসি, তাও আবার টেকনিক্যালি নয় মাথা খাটিয়ে। ফিসিং এর লিংক সহ একটা স্প্যামিং নিউস টিউন করতে থাকি স্টার জলসার পেজ এর টিউমেন্টে। লিংকটা ছিল ফিসিং এর আর লেখাটা ছিল এমনঃ-

“আপনাদের প্রিয় অরন্য সিংহ রায় (ইয়াস দাস গুপ্ত) আর বেঁচে নেই। তিনি এক রোড এক্সিডেন্টে মারা গেছেন। বিস্তারিত নিচের লিঙ্কে’’

লিংক এ গেলেই লেখা আসত, কন্টেন্ট ব্লকড। লগিন এন্ড কন্টিনিউ.
ব্যাস, ২-৪ দিনে আমার মেইল এ জমা হলো, ৬৫০+ ফেসবুক একাউন্ট ৯৯% ছিল মেয়ে। ফেসবুকের মেইল-পাসওয়ার্ড গুলো টেম্পমেইলে পালটে দিয়ে স্টাটাস দিয়ে দিতাম. Hacked! মজার ব্যাপার হলো তার ঠিক ২-৩ দিন পর আমার বাসার আশেপাশে নাটক এর ফ্যান গুলো বলতে লাগল নাটকে তো এটা আসো অরন্য না গো, সে তো রোড এক্সিডেন্ট এ Bla-Bla.!
বুঝলাম, মেয়ে মানুষ দ্বারা আমার মত মদন এর বানানো ভূয়া নিউস খুব দ্রুত ছড়ানো সম্ভব।

"চলতে চলতে আমার হাতে খুব ভাল প্রিয় হয়ে উঠল কি লগার (Keylogger)।
তারপর কালি লিন্যাক্স, কত টুলস আরো কত কি! সেগুলো না হয় নাই বলি।  আর এখন তো এগুলোও পুরাতন মনে হয়। "

এর মধ্যেও, আমার জীবনের অনেক মুহুর্তে অনেক কষ্টকর ঘটনা আছে। যা পাবলিক প্লেসে শেয়ার করলাম না। ভালবাসা গুলো আশাকরি কষ্ট তো সবারই থাকে।

ধন্যবাদ এতো কষ্ট করে পড়ার জন্য

Level 0

আমি মাস্টার অব টেক। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 6 বছর 2 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 3 টি টিউন ও 4 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

অস্থির ছিল। ভাইয়ের জন্য শুভ কামনা আর এত কষ্ট করে পোস্ট করার জন্য আপনার জন্যও শুভ কামনা

পোস্ট টা পড়ে অনেক সুন্দর লাগলো…
মাঝে মাঝে সত্যিই ইচ্ছা হয় আমি যদি হ্যাকার হতে পারতাম !!!