অ্যামিডুয়োসের সাহায্যে পিসিতে এন্ড্রয়েডের স্বাদ নিন!

দিন দিন এন্ড্রয়েড প্লাটফর্মের জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকায় এবার উইন্ডোজ ডেক্সটপে কিংবা ল্যাপটপে এন্ড্রয়েড এপ্লিকেশন চালানোর জন্য আমরা আজকাল বেশ কটি এমুলেটর ব্যবহার করে থাকি। তাদের মধ্যে Bluestacks ব্যবহারের দিক থেকে এগিয়ে রয়েছে। আমাদের অনেকেই Bluestacks পছন্দ করেন না এর বিশেষ কয়েকটি ফিচারের কারণে।

পিসিতে এন্ড্রয়েডে কিভাবে চালাবেন সেটা নিয়ে আমি টেকটিউনসে আগেও একটি টিউন করেছিলাম। সেটি ছিলো MeMu সফটওয়্যারটি নিয়ে, মূলত  Bluestacks এর বিকল্প একটি সফটওয়্যার টিউনটি ছিলো। আপনি চাইসে সে টিউনটি আগে থেকে নিতে পারেন যদি চান। নিচের লিংকে চলে যান:

MeMu: বেষ্ট এন্ড্রয়েড এমুলেটর পিসির জন্য!!

গত বারের টিউনে Bluestacks এর বিকল্প এবং তার থেকে সুন্দর একটি সফটওয়্যার নিয়ে টিউন করেছিলাম। আজও আমি পিসিতে কিভাবে এন্ড্রয়েড চালাবেন এই টপিকে কথা বলতে এসেছি কিন্তু আজ আমি ব্যবহার করবো অন্য একটি সফটওয়্যার। যার নাম Amiduos.

এই সফটওয়্যারটির বৈশিষ্ট্য হলো এটি দিয়ে আপনি এন্ড্র্রয়েড সিস্টেমের বেসিক সকল ফাংশন ব্যবহার করতে পারবেন এবং এন্ড্রয়েডের ease-of-access ফিচারগুলোকেও উপভোগ করতে পারবেন যেগুলোকে আপনি Bluestacks বা অনান্য সফটওয়্যারে পাবেন না।

মনে রাখবেন amiduos কিন্তু কোনো এমুলেটর নয়, এটি একটি OS! আর এটিকে আপনি আপনার উইন্ডোজের পাশাপাশি চালাতে পারবেন এবং যখন তখন বুট করে নিতে পারবেন ডুয়াল বুটের ঝামেলা ছাড়াই। আর আলাদা OS / অপারেটিং সিস্টেম হওয়ায় এটি সরাসরি আপনার পিসির হার্ডওয়্যারের উপর ভিক্তি করে চলে তাই আপনি এন্ড্রয়েড পুরো স্পিডে চালাতে পারবেন।

অন্যান্য সফটওয়্যারগুলোতে এরকম পূর্ণ স্পিড আপনি পাবেন না। তো চলুন কিভাবে এই চমৎকার Amiduos আপনার পিসিতে চালাবেন সেটি দেখি নেই:

AMIDuOS একটি কর্মাশিয়াল সফটওয়্যার। আর এটিকে বৈধভাবে চালাতে হলে আপনাকে সরাসরি এদের American Megatrends ওয়েবসাইট হতে ট্রায়াল সংস্করণটি ডাউনলোড করে নিতে হবে।

সফটওয়্যারটির প্রো ভার্সন হচ্ছে এন্ড্রয়েড ৫.০ এবং এক মাসের ফ্রি টায়াল ইউজের পর এটিকে ১৫ ডলার দিয়ে আপনাকে কিনে নিতে হবে। আর সফটওয়্যারটির Lite সংস্করণে রয়েছে এন্ড্রয়েড ৪.০ আর এটিও এক মাসের ফ্রি টায়ালের পর ১০ ডলার দিয়ে কিনে নিতে হবে। আর গুগলে সার্চ দিলে সফটওয়্যারটির পাইরেটের সংস্করণ আপনি পেয়ে যাবেন। যেহেতু টেকটিউনস পাইরেসিতে বিশ্বাস করে না তাই আমি এখানে সফটওয়্যারের অরিজিনাল সাইটের লিংক দিয়ে দিচ্ছি।

প্রথমেই আপনাকে Amiduos সফটওয়্যারটি ডাউনলোড করে নিতে হবে। ডাউনলোড করার জন্য তাদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে চলে যান এখানে ক্লিক করে। তারপর আপনার পিসিতে ব্যবহৃত উইন্ডোজের বিট সংষ্করণ মোতাবেক সফটওয়্যারটির ৩২বিট বা ৬৪বিট সংষ্করণটি ডাউনলোড করে ফেলুন। এরপর DuOSInstaller.exe ফাইলটি চালু করে সফটওয়্যারটি আপনার পিসিতে ইন্সটল করে নিন। তারপর নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করুন:

১) সফটওয়্যারটি ডাউনলোড এবং ইন্সটল করা হয়ে গেলে এবার আপনার ব্রাউজারে একটি ট্যাব ওপেন হবে নিচের ছবির মতো। এখানে আপনাকে গুগল এপপস ইন্সটল করতে বলবে। এই সফটওয়্যারটি ইন্সটল দিলে আপনি Amiduos থেকে গুগল প্লে স্টোরের সকল সুবিধা উপভোগ করতে পারবেন। আপনার Amiduos এর সংস্করণ মোতাবেক গ্যাপস প্যাকেজটি ডাউনলোড করে নিন।

২) গ্যাপস এপপ জিপ ফাইলটি ডাউনলোড করা হয়ে গেলে amiduos চালু করুন। তারপর জিপ ফাইলটির উপর রাইট মাউস বাটন ক্লিক করে Apply to DuOS কমান্ডে ক্লিক করুন। এবার কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন।

৩) এবার স্টার্ট মেনু থেকে DuOS Configuration Tool অপশনে ক্লিক করে amiduos এর সেটিং করে নিন। এখানে কয়েকটি ট্যাব সম্বলিত একটি অপশন উইন্ডো পাবেন। General ট্যাবে আপনি সফটওয়্যারটির বেসিক সেটিংসগুলো পাবেন যেমন বেসিক কনট্রোল সেটিং, স্ক্রিণ সাইজ সেটিং, শেয়ারড ফোল্ডার সেটিংস ইত্যাদি। Advanced ট্যাব থেকে আপনি amiduos এর জন্য আপনার পিসির র‌্যামকে ফিক্স করে দিতে পারেন। কমপক্ষে ২ গিগাবাইট র‌্যাম দরকার হবে সফটওয়্যারটি চালাতে। তাই নুন্যতম ৪ গিগাবাইট র‌্যাম ছাড়া আপনার পিসিতে এই সফটওয়্যারটি না ব্যবহার করাই শ্রেয়। সর্বশেষ Properties অপশন থেকে মেশিনের IMEI এবং ডিভাইস নাম পরিবর্তন করতে পারবেন আপনি।

৪) এবার আপনি Amiduos সফটওয়্যারটি ব্যবহার করার জন্য রেডি! সফটওয়্যারটি চালূ করুন! আর পিসিতে পুর্ণাঙ্গ স্পিডে এন্ড্রয়েডের মজা নিন।

সফটওয়্যারটির ভালো দিক:

  • ফাস্ট এবং স্মুথ পারফরমেন্স, পিসির হার্ডওয়্যারের উপর ভিক্তি করে
  • ফুল সেন্সর ব্যবহার করা হয়
  • গেম কন্ট্রোলার সার্পোট
  • কিবোর্ড শটকার্টস সাপোর্ট
  • রুট মোড ফিচার

সফটওয়্যারটির মন্দ দিক:

  • প্রচুর র‌্যাম খায়!
  • ডিসপ্লে মোডে সুইচ করা একটু কষ্টকর
  • প্রিমিয়াম ফিচারগুলো টাকা দিয়ে কিনতে হয়
  • ভালো পারফরমেন্সের পিসি না হলে Windowed মোডে চালাতে বেশ ভোগান্তি পেতে হয়

সবকিছুরই ভালো এবং মন্দ দিক রয়েছে। যারা হাই ফাই পিসি থাকা সত্বেও bluestacks এ পূর্ণাঙ্গ স্পিড পাচ্ছেন না তারা আজকের এই সফটওয়্যারটি অবশ্যই ট্রাই করে দেখবেন। তবে এটায় বেশ কটি বাগ রয়েছে। যেমন হঠাৎ এপপ ক্রাশ করা, ফুল স্ক্রিণ এবং মিনিমাইজ করার সময় সফটওয়্যারটি রিস্টার্ট নেওয়া ইত্যাদি। তবে আমি আশা করবো এন্ড্রয়েডের এর সবোর্চ্চ স্পিড পারফরমেন্স আপনি আজকের সফটওয়্যারেই পাবেন। তো আজ এ পর্যন্তই। আগামীতে অন্য কোনো টপিক নিয়ে আমি টিউনার গেমওয়ালা হাজির হয়ে যাবো আপনাদের প্রিয় বাংলা টেকনোলজি ব্লগ টেকটিউনসে!

টিউনটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

Level 10

আমি ফাহাদ হোসেন। Supreme Top Tuner, Techtunes, Dhaka। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 12 বছর 3 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 661 টি টিউন ও 428 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 149 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।

যার কেউ নাই তার কম্পিউটার আছে!


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস