অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং গাইডলাইন ২য় পর্ব

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের ২য় পর্বে আপনাদের স্বাগতম। ১ম পর্বে আলোচনা করেছিলাম যে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করার পূর্বে মার্কেটিং জগতে কাজ করতে গেলে আপনার মধ্যে যে গুনগুলো থাকা প্রয়োজন। কারন মার্কেটিং হল চলমান একটি কাজ, এখানে আপনাকে অব্যাহতভাবে লেগে থাকতে হবে। দ্বিতীয় পর্বে যে বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করবো সেগুলো হল, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং সম্পর্কে সঠিক ধারণা, একটি ওয়েবসাইট তৈরি এবং একটি ট্রাস্টেড মার্কেটপ্লেসে জয়েন করা। তাহলে চলুন শুরু করা যাকঃ

 

১। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কিঃ

কোন কোম্পানিতে জয়েন করার পর আপনার রেফারেন্সের মাধ্যমে যখন কোম্পানির কোন প্রোডাক্ট বা সার্ভিস সেল হয়, তখন আপনার রেফারেন্সের মাধ্যমে সেল হওয়ায় কোম্পানি আপনাকে একটি নির্দিষ্ট কমিশন দেয়। মূলত অনলাইনে এই পদ্ধিতে আয় করাকে বলা হয় অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং। আর যে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে তাকে বলা হয় অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার। কেন আপনি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করবেন? এটা তো বলতে হবে না, আপনি বুঝতেই পারছেন। অনলাইনে এমন শত শত কোম্পানি আছে যারা অ্যাফিলিয়েট পার্টনার নিয়ে থাকে। একজন অ্যাফিলিয়েট পার্টনারের মাধ্যমে একদিকে কোম্পানিগুলোর বিশাল আয়ও হচ্ছে এবং অনলাইনে দিন দিন তাদের কোম্পানির পরিধি বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং অ্যাফিলিয়েট পার্টনারেদেরও ইনকাম হচ্ছে। আপনিও একটি মার্কেটপ্লেসে জয়েন করে হিউজ পরিমাণ আয় করতে পারবেন। বিভিন্নভাবে আপনি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে পারেন। যেমন-

  1. প্রোডাক্ট সেল করানোর মাধ্যমেঃ একটি কোম্পানির বিভিন্ন প্রোডাক্ট যেমন- ইলেকট্রনিক, বেবি আইটেম, ফুড হেলথি আইটেম ইত্যাদি সেল করার মাধ্যমে আয় করতে পারেন। যেমনঃ

http://www.amazon.com, http://www.aliexpress.com, http://www.clickbank.com,

  1. সার্ভিস সেলের মাধ্যমেঃ ওয়েব হোস্টিং এবং অন্যান্য সার্ভিস সেলের এর মাধ্যমেও আপনি আয় করতে পারেন। যেমনঃ

http://www.ipage.com, http://www.semrush.com, http://www.serpstat.com,

  1. রেজিস্ট্রেশন করার মাধ্যমেঃ আপনি বিভিন্ন কোম্পানির রেজিস্ট্রেশন করিয়ে আয় করতে পারেন। যেমনঃ

http://www.payoneer.com, http://www.payza.com, http://www.bravenet.com,

  1. ডাউনলোডের মাধ্যমেঃ আপনার রেফারেলের মাধ্যমে যদি কোন কিছু ডাউনলোড করে তাহলেও আপনি একটি কমিশন আয় করতে পারেন। যেমনঃ

http://www.file-upload.com,  http://www.dollarupload.com,

এখন আপনার মনে প্রশ্ন আসতে পারে এইসকল মার্কেটপ্লেস থেকে কি পরিমাণ আয় করা যাবে? আসলে এখানে আয়ের কোন লিমিট নেই। সর্বনিম্ন ২০০ ডলার থেকে শুরু করে আনলিমিটেড। আপনার যোগ্যতা, মার্কেটিং দক্ষতা এবং আপনি যত পরিশ্রম করতে পারবেন তত ইনকাম। বেশি আয় করার পরিমাণটা আপনার কাজের উপর নির্ভর করছে।

 

২। একটি ওয়েবসাইট তৈরি করুনঃ

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার জন্য আপনাকে আমি অবশ্যই পরামর্শ দিব যে একটি ওয়েব সাইট তৈরি করুন। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমেও অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে পারবেন কিন্তু ওয়েবসাইটের মত পরিপূর্ণভাবে করতে পারবেন না। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার জন্য কেন আপনি ওয়েবসাইট তৈরি করবেন সেই বিষয়গুলো হলঃ

  1. ওয়েবসাইট তৈরি সুবিধা হল আপনি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ২ ভাবে ইনকাম করতে পারবেন। আপনার সাইটকে গুগুল অ্যাডসেন্স বা এই ধরনের অন্যান্য অ্যাডসেন্স সাইটের মাধ্যমে আপনার সাইটকে মনিটাইজ করে এবং অ্যাফিলিয়েট প্রোডাক্ট সেল করার মাধ্যমে আয় করতে পারবেন। এই সুবিধা কিন্তু কোন সোশ্যাল মিডিয়া বা অন্য কোনভাবে করতে পারবেন না।
  2. আপনি যখন ফ্রিল্যান্সার বা আপওয়ার্ক এর মত নেটওয়ার্কগুলোতে জয়েন করবেন এবং সেখানে বিভিন্ন কোম্পানির অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং বা যেকোনো প্রোজেক্টে কাজ করতে চাইবেন তখন কোম্পানি আপনার ওয়েবসাইট, প্রোফাইল, পোর্টফলিও চাইবে। এই কাজগুলো কিন্তু ওয়েবসাইট ছাড়া কখনও সম্ভব না। তাই আপনার সফল অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর জন্যই অবশ্যই একটি ওয়েবসাইট প্রয়োজন।
  3. এমন অনেক মার্কেটপ্লেস আছে যাদের মার্কেটপ্লেসে কাজ করতে গেলে ওয়েবসাইট ছাড়া আপনি কখনও অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
  4. ওয়েবসাইটে আপনার নিজের ইচ্ছে মত প্রোডাক্ট প্রমোট করতে পারবেন কিন্তু ফেসবুক বা অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে তা সম্ভব না।
  5. ওয়েবসাইটের উদাহরণটা হল আপনার নিজের বাসার মত। অনলাইনে আপনাকে সঠিকভাবে চিনার সঠিক মাধ্যম হল ওয়েবসাইট।

আশা করি, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার জন্য একটি ওয়েবসাইটের প্রয়োজনীয়তা আপনি বুঝতে পেরেছেন। এই জন্যই দেখবেন প্রত্যেক অ্যাফিলিয়েট মার্কেটারের একটি ওয়েবসাইট আছে। আপনাকে আপনার সাইটের হিডার থেকে ফুটার পর্যন্ত প্রতিটি সেকশন সুন্দর করে সাজাতে হবে।

 

৩। একটি ট্রাস্টেড মার্কেটপ্লেসে জয়েন করুনঃ

আপনি যদি সফলভাবে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে চান, তাহলে আপনাকে অবশ্যই একটি ট্রাস্টেড মার্কেটপ্লেসে জয়েন করতে হবে। তাছাড়া আপনি সফলভাবে কাজ করতে পারবেন না। অনলাইন অনেক ট্রাস্টেড মার্কেটপ্লেস রয়েছে যেখান থেকে আপনি ১০০০ ডলার পর্যন্ত ইনকাম করতে পারবেন। যেমনঃ

http://www.cj.com,

http://www.amazon.com,

http://www.aliexpress.com,

http://www.clickbank.com,

http://www.themeforest.net,

http://www.hostgator.com,

http://www.namecheap.com,

http://www.bluehost.com,

আপনার সফল ক্যারিয়ার গড়ে তোলার জন্য যেকোনো একটি মার্কেটপ্লেসে জয়েন করতে পারেন। ট্রাস্টেড মার্কেটপ্লেসে জয়েন করার ৩টি কারন আমি আপনাকে বলছিঃ

  1. প্রথমত আপনি নিজে আত্ববিশ্বাসের সাথে কাজ করতে পারবেন। আর আত্ববিশ্বাস ছাড়া কোন কাজে সফলতা অর্জন করা যায় না।
  2. ট্রাস্টেড মার্কেটপ্লেস থেকে হিউজ পরিমাণ আয়ের বিশাল সুযোগ রয়েছে। মানে আপনি যত পরিশ্রম করবেন, আপনার আয়ের পরিমাণ ততই বাড়বে।
  3. ট্রাস্টেড মার্কেটপ্লেস প্রচুর পরিমানে সেল হয়, তাই ট্রাস্টেড মার্কেটপ্লেসের প্রোডাক্ট বেশি সেল করার সুযোগ থাকে।
  4. মার্কেটপ্লেসগুলোর বিশ্বস্ততার কারনে কাস্টমার প্রোডাক্ট ক্রয় করতে বেশি আগ্রহী

 

উপরে উল্লেখিত মার্কেটপ্লেসে জয়েন করে আপনি হিউজ পরিমাণ আয় করতে পারবেন। তাছাড়া অ্যামাজন, আলীএক্সপ্রেসের মত মার্কেটপ্লেসগুলোতে লক্ষ লক্ষ অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার হিসাবে কাজ করছে এবং যথেষ্ট পরিমাণ আয় করছে।

উপসংহারঃ আপনি যদি একজন সফল অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার হতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই এইভাবে কাজ করতে হবে। কখন আপনি এই নিয়মগুলো বাদ দিয়ে তৃতীয় পর্বের জন্য অপেক্ষায় থাকুন ইনশাআল্লাহ।

Level 0

আমি মোহাম্মাদ আলী। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 3 বছর 11 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 9 টি টিউন ও 0 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1 টিউনারকে ফলো করি।

হাই বন্ধুরা, আমি মোহাম্মাদ আলী। আমি একজন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার এবং বাংলায় ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে লেখা-লেখি করি। আমি এই ব্লগের ফাউন্ডার। প্রয়োজনে ব্লগটি ঘুরে আসতে পারেনঃ Blog: https://digitalmarketingsoldier.com


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস