অ্যাডমিশন মাস্টারঃ যেভাবে মেডিকেলের জন্য প্রস্তুতি নেবে সাথে রসায়নের ১টি টেকনিক্যাল শীট

  • সদ্য HSC সমাপ্তকারী শিক্ষার্থীদের জন্য রইল শুভেচ্ছা। সামনে কঠিনতম সময় আসছে ভর্তিযুদ্ধের। মনে রাখবে সবমিলিয়ে বাংলাদেশের সরকারী বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে আসন সংখ্যা ১৯,০০০ এর কাছাকাছি যেখানে প্রতিবছর A+ পায় ৪০,০০০+তাই, A+ দের অর্ধেকের বেশীই চান্স পাবেনা সরকারী প্রতিষ্ঠান গুলোতে। অন্যদিকে সেকেন্ড টাইম মানে গতবছরের অনেকেই এ বছরে পরীক্ষা দেবে এবং তারা অনেকগুলো সিট দখল করে নেবে। সব মিলিয়ে চান্স পাওয়াটা অনেকটাই কঠিন হয়ে যাবে যদি প্রথম থেকে ভালমত পড়াশোনা না করতে পার।

    মেডিকেল ভর্তির জন্য

    যারা মেডিকেলের প্রস্তুতি নিচ্ছ তাদের মোট ২০০ নম্বরের পরীক্ষা হবে। ১০০ স্কোর আর ১০০ MCQ. মেট্রিকের GPA গুনন ৮+ HSC এর GPA গুনন ১২= তোমার স্কোর। মেডিকেলের জন্য GPA কাউন্ট করা হয় অপশনাল সহ। মানে গোল্ডেন A+ আর সাধারণ A+ এর মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। SSC তে 5 আর HSC তে 5 থাকলেই তোমার স্কোর ১০০. আর যাদের GPA ৮ এর কম তার পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেনা। মিনিমাম GPA ৮.০০.

    মানবন্টনঃ

    জীববিজ্ঞানঃ 30, রসায়নঃ 25,পদার্থ 20, ইংরেজী 15 ও সাধারণজ্ঞান 10 এই 100 নম্বরের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। সময় 60 মিনিট মানে 1 ঘন্টা। চিরায়ত নিয়ম অনুসারে মেডিকেল পরীক্ষা হয় কোন এক শুক্রবারে সকাল 10-11 টায়। প্রতি ভুল উত্তরের জন্য 0.25 মার্কস কাটা যাবে মানে প্রতি 4টি ভুল উত্তরের জন্য 1 মার্কস কাটা যাবে। মেডিকেলের MCQ তে ডাবল অ্যানসার, ট্রিপল অ্যানসার বা ব্লাংক থাকতে পারে। অর্থাৎ 4টি MCQ এর মধ্যে কখনো 2টি বা কখনো 3টি উত্তর থাকতে পারে আবার কখনো উত্তর নাও থাকতে পারে। উত্তর না থাকলে দাগানো যাবেনা। দুটো উত্তর থাকলে দুটো উত্তরই দাগাতে হবে।

    কততে চান্স পাব?

    সাধারণত 160 পেলে আশা করা যায় মেডিকেলে চান্স হবে। মানে স্কোর 100 থাকলে পরীক্ষায় 60 পেলেই মোটামুটি চান্স নিশ্চিত থাকে।

    কোন বই পড়তে হবে?

    মেডিকেলের প্রশ্নগুলোতে মারপ্যাচ অনেক বেশী থাকে। স্বাভাবিকভাবে দেখলে প্রশ্ন সহজ মনেহয়, কিন্তু ভুলটা ধরতে পারেনা নবীনেরা। যেমন কাউকে যদি জিজ্ঞেস করা হয়ঃ দ্বিপদ নামকরনের আবিষ্কারক কে? HSC পড়ুয়ারা একলাফে বলে উঠবে ক্যারোলাস লিনিয়াস, কিন্তু এটা ভুল। আবিষ্কারকের নাম হল ক্যাসপার বাউহিন। ক্যারোলাস লিনিয়াস কে বলা হয় দ্বিপদ নামকরণের প্রবর্তক।

    • প্রাণি বিজ্ঞানের জন্য গাজী আজমলের বই পড়তে হবে (সাথে থাকবে নাসিম বানুর বই)
    • উদ্ভিদবিজ্ঞানের জন্য আবুল হাসানের বই পড়তে হবে। (গাজী আজমল দ্বিতীয় বই)
    • রসায়নের জন্যঃ নাগের বই পড়তে হবে। (কবীরের বই দ্বিতীয় স্থানে)
    • পদার্থের জন্যঃ ইসহাকের বই পড়তে হবে (শাহজাহান তপন দ্বিতীয় স্থানে)
    • ইংরেজীর জন্য Advanced এর গ্রামার ও Apex বইটা ভাল
    • সাধারণজ্ঞানের জন্য নতুন বিশ্ব বা যেকোন BCS এর বই ফলো করতে হবে।
    • আর গাইড হিসাবে অবশ্যই থাকবে রয়েল গাইড।

    কিভাবে পড়তে হবে?

    মেডিকেলে ভর্তির জন্য নিখুঁত প্রস্তুতি প্রয়োজন। কোন গাইড বা নোট পড়ে, পড়াকে কমিয়ে নিলে কাজ হবেনা। টেক্সটবুক এর A 2 Z এর উপর দক্ষতা থাকতে হবে।

    ভর্তি পরীক্ষায় বায়োলজি অনেক গুরুত্বপূর্ণ তাই বায়োলজির বইগুলো দাগিয়ে পড়তে হবে। বায়োলজি থেকে সাধারণত বৈশিষ্ট্য, পার্থক্য, ছক আর উদাহরণ পড়তে হয়। এগুলো মনেরাখা বেশ কষ্টের। ছড়া, ছন্দ সাজিয়ে পড়লে এবং কঠিন বিষয়গুলো বারবার লেখার অভ্যাস করলে সহজে আয়ত্বে আসবে।

    মূল বই পড়ার সময় প্রতিটি অধ্যায়ের পাশে নিজের নোট লিখে রাখবে, এগুলো শেষ সময়ে তোমাকে সাহায্য করবে। দক্ষতা যাচাই এর জন্য নিয়মিত পরীক্ষা দেবে। এজন্য কোচিং এর প্রশ্ন কালেক্ট করে বাসায় পরীক্ষা দিতে পার, কোচিং এ ভর্তি হয়ে পরীক্ষা দিতে পার, বা স্পেশালিস্টদের কাছে প্রাইভেট পড়ে দিতে পার, যেটা তোমার সামর্থে কুলায়।

    ভর্তি পরীক্ষা যেহেতু MCQ নির্ভর তাই প্রশ্ন নিয়ে তোমাকে প্রচুর নাড়াচারা করতে হবে। বিগত বছরের প্রশ্নগুলো নিয়মিত দেখে নেবে তাহলে চ্যাপ্টারের কোথা থেকে প্রশ্ন বেশী আসে সে ব্যাপারে তোমার ধারণা পরিষ্কার হয়ে যাবে।

    ডিসকাস করে পড়া ভর্তি পরীক্ষার্থীদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। যারা মেসে থাক, বন্ধুদের নিয়ে বসে একজন অন্যদের প্রশ্ন ধরবে, এভাবে অল্প সময়ে অনেক কিছু শিখতে পারবে। যারা প্রাইভেট পড় তারা নিয়মিত VIVA পরীক্ষা দেবে, এতে তোমার সমস্যাগুলো ট্রেস করতে পারবে। কম সময়ে ভাল প্রস্তুতির জন্য ডিসকাস করে পড়ার কোন বিকল্প নেই।

    মেডিকেলে গাণিতিক সমস্যা খুব কম আসে। তাই পদার্থ ও রসায়নের থিওরীর দিকে মনোযোগ বাড়াতে হবে।

    মেডিকেলে উদ্ভিদবিদ্যা ও প্রাণিবিদ্যার মধ্যে প্রাণি থেকে প্রশ্ন বেশী আসে। অন্যদিকে রসায়ন ১ম ও ২য় পত্রের মধ্যে ১মপত্র থেকে প্রশ্ন বেশী আসে। পদার্থের ক্ষেত্রে ২য় পত্র থেকে বেশী প্রশ্ন করতে দেখা যায়। গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়গুলো জেনে নিয়ে ভালমত রপ্ত করতে হবে।

    ইংরেজী এবং সাধারণজ্ঞানের বাধাধরা কোন সিলেবাস নেই। তবে ইংরেজীর Voice, Narration, Transformation, Article , Parts Of Speech, Synonym -Antonym, Idiom-Phrase থেকে প্রতিবছর প্রশ্ন আসে তাই এগুলোতে ভাল দক্ষতা থাকতে হবে।

    বিগত দুবছরের প্রশ্ন থেকে দেখা যায় সাধারণ জ্ঞান কোন নির্দিষ্ট নীতি অনুসরণ করছেনা। মেডিকেলে সাধারণত সাম্প্রতিক বিশ্ব থেকে কোন প্রশ্ন আসেনা। তাই সাম্প্রতিক বিশ্ব বাদ দিয়ে সাধারণজ্ঞান যেমন: রাজধানী, মুদ্রা, সদরদপ্তর,ঐতিহাসিক স্থান, নদ-নদী, বিবিধ আন্তর্জাতিক ও বিবিধ বাংলাদেশ বিষয় ভাল করে রপ্ত করতে হবে। প্রতিদিন রুটিন করে সময় বের করে নিয়ে ইংরেজী ও সাধারনজ্ঞান চর্চা বাড়াতে হবে মূল পড়াশোনার পাশাপাশি।

    কেমিস্ট্রির নোটঃ

    স্টুডেন্টদের পড়াশোনো সহজীকরণের জন্য আমার নিজস্ব কিছু প্রফেশনাল টেকনিক্যাল শীট রয়েছে। এর মধ্যে রসায়নের একটি শীট শেয়ার করলাম। ভার্সিটি মেডিকেল বা প্রকৌশল সব ধরণের শিক্ষার্থীরাই এটি নামিয়ে প্রিন্ট করে নেবে। ৬ পেজের এই শীট থেকে বিগত বছরগুলোতে ভার্সিটিতে মিনিমাম ২টো প্রশ্ন কমন পড়েছে বলে দেখা যায়।

    ডাউনলোড মিডিয়াফায়ার লিংক (1.64 মেগাবাইট)

    এভাবেই, সততা,নিষ্টা এবং পরিশ্রমই তোমাকে দেবে সফলতার স্বাদ।

    ভাল থেকে, সুস্থ থেক।

    তানজিল,

    রংপুর মেডিকেল কলেজ।

    সিনিয়র সাবজেক্ট স্পেশালিষ্ট (বায়োলজি ও কেমিস্ট্রি)


    রংপুর শাখা, রংপুর।

    Author: Dr. Tanzil

Level 2

আমি নেট মাস্টার। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 13 বছর 7 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 64 টি টিউন ও 1834 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 8 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

যদিও মেডিকেল আমার জন্য না, তবে এটা সত্যিই প্রশংসনীয় উদ্যোগ! কারণ বেশ কিছু তথ্য কাজে লাগবে। 😀
অনেক ধন্যবাদ 🙂

হি হি হি হি,নেট মাস্টার দেখি এইবার আডমিশন মাস্টার 😀 । ভালো লাগলো ।তবে আপনার কাছ থেকে গুগল নিয়ে টিউন চাই ।

Level 0

Thanks to you.

আপনাকে ধন্যবাদ।
কাজে লাগবে আজ থেকে এডমিশন এর পড়া শুরু করছি। কোচিং ও আজ থেকে শুরু হচ্ছে।

দোয়া করবেন।

ভাইয়া অন্য সাবজেক্ট এর আর কিছু নেই ?? থাকলে দেওয়া যাবে পিলিজ?? 😛 আর কেমিস্ট্রি তেই বেশি পেচাল … 😀

আচ্ছা ভাইয়া পদার্থের জন্য ইসহাকের চেয়ে শাহজাহান তপনেরটা মেডিকেলের জন্য ভালো নয় কী?
খুব ভালো উদ্দ্যোগ। @ প্রিয়।

    @মাসুম রাহমান তোহা: হ্যা তপন স্যারের বইটা বেশী ভাল। তবে ইসহাত পড়লে তপনে থেকে কমন পাওয়া যায়, কারণ ইসহাকে তথ্য বেশী আছে। রয়েলগাইড পাশে রেখে পড়া আরো ভাল। তাতেকরে সব বই এর তথ্য পাওয়া যায়।

আর গাইড হিসাবে অবশ্যই থাকবে রয়েল গাইড।

গাইড বইয়ের কোনো প্রয়োজনীতা আমি দেখি না। মূল বই চান্স পাবার জন্যে যথেষ্ট। শুধু শুধু গাইড বই দিয়ে স্টুডেন্টদের মাথা নষ্ট করার কোনো মানে হয় না।

    @samaun khalid collins: ভর্তি পরীক্ষার বিগত বছরের প্রশ্ন এবং সেগুলোর ব্যাখ্যা গাইড ছাড়া পাবে কই?? রয়েল গাইড মেডিকেলের জন্য হেল্পফুল। অন্ততপক্ষে যারা দুটো বই পড়তে পারেনা তারা এখান থেকে বাড়তি সব তথ্য পেয়ে যাবে। বিশেষত অ্যাপেনডিক্সগুলো জটিল!

তবে এধরনের শীট অনেক কাজে দেয়। এধরনের আরও শীট জনস্বার্থে দিলে ওদের অনেক কাজে আসবে

সুন্দর !……………অন্যান্য নোট গুলও চাই

অসামসালা!! আরও চাই। আমি এবার ইন্টার 1st ইয়ারে ভর্তি হব। বই খাতা নাড়াচাড়া করে তো আমার মাথা নষ্ট। এত পড়া কি মানুষের পক্ষে সম্ভব?

    @ছোটভাই: HSC তে তো শুধু প্রশ্ন পড়ানো হয়। তবে ভবিষ্যতে ভাল করতে MCQ এর জন্য বই দাগিয়ে পড়বে। শুরু থেকে ভাল কনসেপশন থাকলে পরবর্তিতে মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়বেনা।

Level 0

অনেক ভাল উদ্যোগ……….. আশা করি আরো কিছু নিয়ে আমাদের মাঝে অতি শীঘ্রই আবার হাজির হবেন

ভাইয়া বাকিগুলো দেন 😀 আপনাকে জালানো শুরু … 😀

Level New

vaia, ami a bar 1st year a vorti holam ctg college a, amake kichu poralekhar tips diben??