সাবধান! ল্যাপটপ কেনার আগে অবশ্যই এই বিষয়গুলো আপনার জানা প্রয়োজন। কমদামে সবচেয়ে ভাল ল্যাপটপ কিনুন

যারা কিছুদিনের মধ্যেই নতুন কম্পিউটার কিনবেন ভাবছেন। বিশেষ করে ল্যাপটপ কিনতে চান তাহলে ল্যাপটপ কেনার পূর্বে আপনার কিছু জিনিস অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে। কিছুদিন আগে আমি একটি টিউন লিখেছিলাম যেখানে আমি বলেছিলাম কম্পিউটার কেনার পূর্বে আপনার যে জিনিসগুলো মাথায় রাখতে হবে। টিউন পরতে এখানে ক্লিক করুন। যাই হোক আজকের টিউনে আমি ল্যাপটপ নিয়ে কথা বলব। যাই হোক আপনি যদি আপনার কম্পিউটারকে সবসময় সাথে নিয়ে যেতে চান তবে অবশ্যই আপনার ল্যাপটপ কেনা উচিত। এছাড়াও ল্যাপটপ কেনার পূর্বে আরো অনেক বিষয় নিয়ে ভাবতে হবে।

কারণ বিভন্ন গ্রুপে অনেকেই প্রশ্ন করেন যে আসলে তার কোন ধরনের ল্যাপটপ কেনা উচিত? আবার অনেকে তো মডেল চেয়ে বসেন। আসলে এসব প্রশ্নের কোন সরাসুরি উত্তর নেই। কারণ আপনি কোন ধরনের কাজের জন্য ল্যাপটপ কিনবেন সেটা আপনি ভাল জানেন। তাই আপনাকেই ঠিক করতে হবে আপনার কি ল্যাপটপ কেনা দরকার। আপনি যদি কিছু ঠিক না করেই ল্যাপটপ কিনতে যান তাহলে পরে দেখা যাবে আপনি যে কাজের জন্য ল্যাপটপ কিনেছেন সেই কাজই করতে পারছেন না।

সাইজ

যদি ল্যাপটপ সব জায়গায় সাথে নিয়ে যেতে চান এবং দীর্ঘ সময় ভ্রমন করেন তাহলে আপনার অবশ্যই ছোট সাইজের ল্যাপটপ নেয়া দরকার। এবং সে অনুযায়ী সাইজে ছোট কিন্তু আপনি যেই ফিচার চান সেগুলো আছে এমন ল্যাপটপ কেনা দরকার। এবং অবশ্যই ওজনের দিকে নজর দিতে হবে। কারণ অনেকসময় ল্যাপটপ আকারে ছোট হলেও ওজন বেশি থাকে।

তাই ওজন দেখে নিতে হবে। এরকম ল্যাপটপকে সাধারনত আল্ট্রাবুক বলে। এধরনের ল্যাপটপগুলো সাইজে ছোট, ওজন কম এবং এতে প্রায় সব আধুনিক ফিচার পাওয়া যায়। এধরনের ল্যাপটপগুলো ১২.৫ ইঞ্চি থেকে ১৩.৩ ইঞ্চি পর্যন্ত পাওয়া যায়। এবং আল্ট্রাবুকগুলো ১-১.৫ কে.জির মত হয়ে থাকে।

স্ক্রীন কোয়ালিটি

আপনি যদি দীর্ঘ সময় কম্পিউটারের স্ক্রীনের দিকে তাকিয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই ভাল স্ক্রীন আছে এমন ল্যাপটপ কিনতে হবে। এখনকার অনেক ল্যাপটপেই টাচ স্ক্রীন আছে। তাই যারা টাচ ব্যবহারে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন তবে সেরকম ল্যাপটপ কিনে নিতে পারেন। তবে টাচ স্ক্রীন গুলোর উপর আলো পরলে খুব বেশি প্রতিফলিত হয়।

তাই আপনার স্ক্রীন দেখতে অসুবিধা হতে পারে। তাই এ ব্যাপারে চিন্তা করে কম্পিউটার কিনুন। এরপরে আপনাকে রেশুলেশন দেখে কিনতে হবে। ৩০-৫০ হাজারের মধ্যের ল্যাপটপগুলোতে সাধারণত ১৩৬৬*৭৬৮ পিক্সেলের মনিটর দেয়া থাকে। তবে আপনারা যদি ১৯২০*১০৮০ পিক্সেলের স্ক্রীনের ল্যাপটপ নেন তবে ডিসপ্লে আউটপুট অনেক ভাল পাবেন।

কারণ এতে ইমেজ কোয়ালিটি অনেক ভাল হবে। এছাড়াও স্ক্রীনের ভিউইং আঙ্গেল দেখে কম্পিউটার কেনা দরকার। তবে সবচেয়ে ভাল হয় দোকানে গিয়ে নিজে কম্পিউটার দেখে আপনার কেমন লাগে সে অনুযায়ী কম্পিউটার কেনা। যদি দোকানে জাওয়া সম্ভব না হয় তবে রিভিউ দেখেও কিছুটা ধারণা নিতে পারেন।

কীবোর্ড

আপনি যদি ল্যাপটপে অনেক টাইপ করতে চান তবে আপনাকে অবশ্যই ল্যাপটপের কীবোর্ড দেখে কেনা দরকার। কারণ ভাল কীবোর্ড না হলে আপনি খুব তারাতারি টাইপ করতে পারবেন না। আবার কীবোর্ডে একটা বাটন থেকে আরেকটা বাটনের দূরত্ব দেখে আপনার যেটা ভাল লাগে সেটা কেনা উচিত। এছাড়াও বাটন এর সাইজ দেখে নেয়া দরকার। আর আপনি যদি রাতে কীবোর্ড ব্যবহার করতে চান তাহলে ব্যাকলিট আছে এমন কীবোর্ড দেখে ল্যাপটপ কেনা উচিত।

সি.পি.উ

আপনার কম্পিউটার একসাথে কতগুলো কাজ করতে পারবে বা আপনার কম্পিউটার কতটুকু গতি সম্পন্ন হবে তা নির্ভর করে সি.পি.উ এর উপর। তাই আপনার বাজেট অনুযায়ী ভাল সি.পি.উ দেখে কিনেবেন। কারণ আপনি যদি আপনার কম্পিউটার দিয়ে ভিডিও এডিটিং এর মত কাজ করতে চান তবে আপনার একটু ভাল প্রসেসর নিতে হবে।

তাই সেই হিসেব করেই ল্যাপটপ কিনুন। কম দামের ভিতরে core i3, এর চেয়ে একটু ভাল চাইলে core i5, এবং বাজেট যদি আরো বেশি হয় তবে core i7 প্রসেসর আছে এমন কম্পিউটার নিন। তবে core i5 va i7 এর ল্যাপটপগুলোর দাম মোটামুটি বেশি। আবার আপনি যদি আপনার ল্যাপটপকে পা-য়ের উপর রেখে চালাতে চান তবে আপনাকে প্রসেসর নিয়ে ভাবতে হবে। কারণ যত ক্ষমতাসম্পন্ন প্রসেসর তা তত বেশি গরম হয়।

র‍্যাম

একসাথে অনেকগুলো কাজ করার জন্য প্রসেসর এর পাশাপাশি একটু বেশি পরিমাণের র‍্যাম প্রয়োজন। ৩০-৪০ হাজার টাকার ভিতরে কম্পিউটার কিনলে সাধারণত আপনি ৪ জিবি র‍্যাম পাবেন। তবে চাইলে তা বাড়িয়ে নিতে পারবেন। কারণ প্রায় সব ল্যাপটপেই র‍্যাম স্লট একটা ফাকা থাকে। তবে আমি আপনাদের বলব কমপক্ষে ৮জিবি র‍্যাম আছে এমন কম্পিউটার কিনুন। কারণ এখনকার সফটওয়্যারগুলোতে অনেক বেশি র‍্যাম প্রয়োজন হয়।

স্টোরেজ

এখনকার বেশিরভাগ ল্যাপটপেই সাধারণত ১টেরাবাইট এইচ.ডি.ডি দেয়া হয়। কিন্তু যদি আপনি হাল্কা এবং কম ওজনের ল্যাপটপ চান তবে অবশ্যই এস.এস.ডি আছে এমন ল্যাপটপ কিনবেন। কারণ এইচ.ডি.ডি থেকে এস.এস.ডি যেমন ফাস্ট তেমন অনেক হাল্কা। এবং যদি গতির চিন্তা করেন তাহলে একটি এস.এসডি একটি এইচ.ডি.ডি থেকে কমপক্ষে ৯-১০ গুন ফাস্ট।

তবে এইচ.ডি.ডি থেকে এস.এস.ডির দাম অনেক বেশি। একটি ১টেরাবাইট এইচ.ডি.ডির দাম একটি ১২০জিবি এস.এস.ডির দামের সমান। তবে আমি বলবো আপনার অবশ্যই এস.এস.ডি আছে এমন কম্পিউটার কেনা উচিত।

ব্যাটারি লাইফ

আপনি যখন অনলাইনে কোন ল্যাপটপের অ্যাড দেখবেন তখন আপনাকে যেই ব্যাটারি লাইফ এর কথা বলা হবে আপনি তা আসল ল্যাপটপে পাবেন না। কারণ ব্যাটারি লাইফ অনেক কিছুর উপর নির্ভর করে। আবার যদি বেশি ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যাটারি চান তাহলে ল্যাপটপের ওজন বেড়ে যাবে। তবে যেকোনো ১৩.৩ ইঞ্চি আল্ট্রাবুক এর জন্য ৫০ওয়াট ঘণ্টা এর ব্যাটারি আনাকে সবচেয়ে ভাল ফলাফল দিতে পারে। তবে এটা সবসময় ঠিক নাও হতে পারে। ব্যাটারি লাইফ পুরোতাই আপনার ব্যবহারের উপর।

ইউএসবি পোর্ট

আপনি যখন ল্যাপটপ কিনবেন তখন অবশ্যই দেখে নিবেন জে ল্যাপটপে ইউএসবি ৩ পোর্ট আছে কিনা। যদি না থাকে তবে অই ল্যাপটপ কিনবেন না। যদি সেকেন্ড হ্যান্ড ল্যাপটপ কেনেন তবে আলাদা কথা। তবে নতুন ল্যাপটপ কিনলে অবশ্যই ইউএসবি পোর্ট দেখে নিবেন। কারণ ইউএসবি ২ এর গতি অনেক কম। তাই ইউএসবি ৩ সহ ল্যাপটপ কিনবেন। এবং দেখে নিবেন জাতে কমপক্ষে ২-৩ টি ইউএসবি ৩ পোর্ট থাকে।

বিল্ড কোয়ালিটি

আপনি যতই সতর্ক থাকুন না কেন, ল্যাপটপ হাত থেকে পরে যেতেই পারে। অথবা ল্যাপটপের উপর অন্য কিছু পরতেই পারে। তাই অবশ্যই ভাল মানের জিনিস দিয়ে তৈরির ল্যাপটপ কেনা উচিত। যেন এরকম সমস্যায় ল্যাপটপের কিছু না হয়। এখন বাজারে এরকম অনেক শক্তপোক্ত ল্যাপটপ আছে। আপনারা একটু খুঁজলেই পেয়ে যাবেন।

বাজেট

আপনি অনেক জিনিস নিজের পছন্দমত নিয়ে দেখলেন আপনার বাজেটের সাথে মেলে না। তাই সমস্যা হতে পারে। তাই নিজের পছন্দের পাশাপাশি আপনার হাতে কি পরিমাণ টাকা আছে সেই হিসেব করে ল্যাপটপ পছন্দ করবেন। এবং আপনি যেই টাকা দিয়ে ল্যাপটপ কিনছেন সেই টাকা দিয়ে ভাল জিনিসটি কিনছেন কিনা তা নিশ্চিত করুন।

অর্থাৎ আপনি আপনার বাজেটের মধ্যে পরে এমন কয়েকটি ল্যাপটপ পছন্দ করুন। তারপরে দোকানে গিয়ে যেটি আপনার কাছে ভাল মনে হয় সেটি কিনবেন। তবে ল্যাপটপ বা কম্পিউটার কেনার সময় এ ব্যাপারে অভিজ্ঞ কাউকে সাথে নেয়া ভাল।

আজ অনেক কথা বলে ফেললাম। আশা করি আপনারা আমার কথা বুঝতে পেরেছেন। তারপরেও যদি আপনাদের ল্যাপটপ কেনা নিয়ে কোন সমস্যা হয় তাহলে নিশ্চিন্ত মনে টিউমেন্ট করুন। আমি আপনাদের পাশে আছি। সবাই ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন।

Level 2

আমি আশরাফুল ফিরোজ। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 9 বছর 7 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 77 টি টিউন ও 35 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 6 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

120 Gb te ekta Game o install hobe na vai 🙁