পানি থেকে আয়রন, আর্সেনিক, ক্লোরিন, সীসা, ক্যাডমিয়াম ইত্যাদি ক্ষতিকর পদার্থ পুরোপুরি দূর করার উপায় কী?

টিউন বিভাগ অন্যান্য
প্রকাশিত
জোসস করেছেন

এক কথায় যদি উত্তর দেই তবে আপনাকে ব্যবহার করতে হবে বিশ্বের সবচেয়ে সর্বাধুনিক পানি বিশুদ্ধকরন পদ্ধতি,  রিভার্স অসমোসিস। সময় থাকলে বিস্তারিত পড়ুন।

পানি নিরাপদ ও বিশুদ্ধকরণের গতানুগতিক পদ্ধতি হলো-

  • হ্যালোজেনেশন বা জার্ম কিলিং পদ্ধতি

ক্লোরিন, ফ্লোরিন, ব্রোমিন, আয়োডিন এই চারটি উপাদানের সমন্বয়ে হ্যালোজেনেশন বা জার্ম কিলিং করা হয়। এ পদ্ধতির পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া রয়েছে। দীর্ঘদিন এ পদ্ধতিতে পানি পরিশোধন করে পান করলে ক্যান্সারসহ নানাবিধ শারীরিক রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।

  • পটাশ বা ফিটকিরি পদ্ধতি

সামান্য পরিমাণ ফিটকিরি পানিতে মিশিয়ে ছয় ঘণ্টা অপেক্ষা করে তা থেকে বিশুদ্ধ পানি পাওয়া সম্ভব। এক্ষেত্রে পাত্রের উপর থেকে পানি সংগ্রহ করতে হবে ও তলানি ফেলে দিতে হবে। এ পদ্ধতি কিছুটা জীবাণু দূর করতে পারলেও ভারী পদার্থ দূর করতে অক্ষম।

  • ব্লিচিং পদ্ধতি

পানিতে ব্লিচিং পাউডার ছিটিয়ে পানি বিশুদ্ধকরনের এ পদ্ধতিতে পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া রয়েছে তথাপি এ পদ্ধতিতে পানি থেকে ভারী পদার্থ দূর করা সম্ভব নয়।

  • আলট্রা ফিল্ট্রেশন পদ্ধতি

এটি একটি ছাঁকনি পদ্ধতি, এ পদ্ধতিতে ভারী পদার্থ কিছুটা দূর হলেও হালকা পদার্থ ও জীবাণু দূর করতে সক্ষম নয়।

  • আল্ট্রাভায়োলেট পদ্ধতি

পরিষ্কার ও স্বচ্ছ পানি জীবাণু মুক্ত করার জন্য অতিবেগুনি বিকিরণ করার পদ্ধতি। এতে করে পানির সব ধরনের ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস হয়ে যায়। কিন্তু পানির হালকা ও ভারী পদার্থ দূর করতে এ পদ্ধতি কার্যকর নয়।

  • ফুটানো পদ্ধতি

পানি বিশুদ্ধ করার সবচেয়ে পুরানো পদ্ধতির একটি হল সেটা ফুটিয়ে নেয়া। এতে করে পানির অধিকাংশ ব্যাকটেরিয়া দূর হলেও পানির হালকা ও ভারী পদার্থ দূর হয় না।

  • রিভার্স অসমোসিস পদ্ধতি

পানিকে শতভাগ নিরাপদ করতে ব্যবহার করা হয় রিভার্স অসমোসিস পদ্ধতি। যা সম্পূর্ণ ক্যামিকেল মুক্ত একটি ছাকনী পদ্ধতি। রিভার্স অসমোসিস পদ্ধতি ৬-১০ টি ধাপে পানিকে বিশুদ্ধ করে ও পানির উপকারি উপাদানগুলো ধরে রাখে।

পানিতে থাকা সীসা স্নায়ুতন্ত্র, শ্বসনতন্ত্র, প্রজননতন্ত্র ও রেচনতন্ত্রের (কিডনী) কার্যক্ষমতা নষ্ট করে সর্বোপরি অপমৃত্যু ডেকে আনে। পানিতে থাকা আর্সেনিকের কারণে চর্মরোগ, হৃদরোগ, রক্ত সঞ্চালনে প্রতিবন্ধকতা, ফুসফুস ও পিত্তথলির ক্যান্সার হতে পারে। পানিতে থাকা ক্যাডমিয়ামের কারনে কিডনির রোগ, অস্টিওপোরেসিস্‌ ও কার্ডিও ভাস্‌কুলার রোগ হতে পারে। পানিতে থাকা হ্যালোজেনের (বিশুদ্ধকরণ পক্রিয়ায় ব্যবহৃত ক্লোরিন, ব্রোমিন ইত্যাদি) কারনে লিভার ক্যান্সার, কিডনি টিউমার, ব্রঙ্কাইটিস, নিউমোনিয়া ইত্যাদি রোগ হয় এবং শ্বাসযন্ত্রের অঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাছাড়াও, নিরাপদ পানি ব্যবহার না করলে আমরা আক্রান্ত হতে পারি টাইফয়েড, কলেরা, ডাইরিয়া, আমাশয়, হেপাটাইসিস-এ, সেলমোনিয়ার মত জটিল রোগে।

প্রাসঙ্গিকভাবে উল্লেখ্য, সীসা পরমানুর আকৃতি ০.০০০২০২ মাইক্রোমিটার, ক্লোরিন পরমানুর আকৃতি ০.০০০১৭৫ মাইক্রোমিটার, ক্যাডমিয়াম পরমানুর আকৃতি ০.০০০১৫৮ মাইক্রোমিটার, আর্সেনিক পরমানুর আকৃতি ০.০০০১৮৫ মাইক্রোমিটার, রিভার্স অসমোসিস (RO) মেমব্রেনের ছিদ্রপথ ০.০০০১ মাইক্রোমিটার। ফলে এই মেমব্রেন অতিক্রম করে পানিতে কোনভাবেই সীসা, আর্সেনিক, ক্লোরিন, ক্যাডমিয়াম বা কোন ধরনের জীবাণু প্রবেশ করতে পারে না।

তাছাড়াও রিভার্স অসমোসিস ওয়াটার পিউরিফায়ার পানি থেকে সকল ধরনের জীবাণু ও ক্ষতিকর পদার্থ দূর করে। পৃথিবীর সবচেয়ে ছোট জীবাণুর থেকেও রিভার্স অসমোসিস ওয়াটার পিউরিফায়ারের মেমব্রেনের ছ্রিদ্রপথ ১০০ গুন ছোট। ফলে এই মেমব্রেন অতিক্রম করে পানিতে কোন ধরনের ভাইরাস/ব্যাকটেরিরার উপস্থিতি থাকতে পারে না। সবচেয়ে ভালো দিক হলো রিভার্স অসমোসিস পদ্ধতিতে কোন ধরনের ক্যামিকেল ব্যবহার করা হয় না, এটি সম্পূর্ণ একটি ছাঁকনি পদ্ধতি।

তবে মনে রাখতে হবে বাজারের সব রিভার্স অসমোসিস ওয়াটার পিউরিফায়ারই কিন্তু শতভাগ নিরাপদ ও বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করতে পারে না, সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের সেরা হতে পারে আল্টিমা ওয়াটার পিউরিফায়ার

Level 0

আমি শাহরিয়ার হাসান। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 3 বছর 7 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 1 টি টিউন ও 0 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস