বিবর্তন তত্ত্বের পক্ষে প্রতারণাপূর্ণ প্রমাণ উপস্থাপন

টিউন বিভাগ রিভিউ
প্রকাশিত
জোসস করেছেন

যারা ডারউইনবাদীদের লেখা পড়েছেন তারা হয়ত লক্ষ্য করে থাকবেন তাদের লেখাতে এমন কিছুকে বিবর্তন তত্ত্বের পক্ষে প্রমাণ হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করা হয় যেগুলো আসলে কোন প্রমাণ নয়। যে কোন যুক্তিবাদী ও বিজ্ঞানমনষ্ক পাঠক আমার সাথে একমত হবেন বলেই বিশ্বাস। নিচে কিছু উদাহরণ তুলে ধরা হলো-

১. ডারউইনবাদীদের লেখাতে যোগ্যতমের টিকে থাকা (Survival of the fittest) নিয়ে আলোচনা করে সেগুলোকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে বিবর্তন তত্ত্বের পক্ষে প্রমাণ হিসেবে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে হয়। অনেকে না বুঝে সেগুলোকেই হয়ত প্রমাণ হিসেবে বিশ্বাস করেন। অথচ “যোগ্যতমের টিকে থাকা” বিবর্তন তত্ত্বের পক্ষে কোন প্রমাণ নয়।

২. তাদের লেখাতে ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, ক্যান্সারের উপর গবেষণামূলক কাজকে বিবর্তন তত্ত্বের পক্ষে প্রমাণ হিসেবে দেখনোর চেষ্টা করা হয়, যেগুলো আসলে মাইক্রোলেভেলের গবেষণা এবং যেগুলোকে বিবর্তন তত্ত্বের পক্ষে কোন প্রমাণ বলা যাবে না।

৩. তাদের লেখাতে এরকম দাবি করা হয় যে, বিশ্বের ৯৯ ভাগ বিজ্ঞানী যেখানে বিবর্তন তত্ত্বে বিশ্বাস করেন সেখানে বিবর্তন তত্ত্ব অবৈজ্ঞানিক বা ভুল হওয়ার অবকাশ কোথায়? ওয়েল, এটিও বিবর্তন তত্ত্বের পক্ষে কোন প্রমাণ নয়। বরঞ্চ এটি লজিক্যাল ফ্যালাসির মধ্যে পড়ে। তাছাড়া সারা বিশ্বের বিজ্ঞানীদের উপর এরকম কোন পরিসংখ্যান আছে বলেও মনে হয় না। এমনকি বিজ্ঞানীদের মধ্যে যারা বিবর্তন তত্ত্বে বিশ্বাস করেন তাদের মধ্যে বিভিন্ন শ্রেণীবিভাগ আছে। একেক জন একেক ভাবে বিবর্তনে বিশ্বাস করেন। ফলে বিজ্ঞানীদেরকে ব্যক্তিগতভাবে জিজ্ঞেস না করে তাদের উপর কিছু চাপিয়ে দেয়া অন্যায়। এককোষী একটি জীব থেকে শুরু করে এলোমেলো পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক নির্বাচনের মাধ্যমে মানুষ সহ উদ্ভিদজগত ও প্রাণীজগতের বিবর্তনে খুব কম বিজ্ঞানীই হয়ত বিশ্বাস করেন।

৪. তাদের লেখাতে দাবি করা হয় এই বলে যে, বিবর্তন তত্ত্ব যদি মিথ্যা হতো তাহলে উদ্ভিদবিজ্ঞান ও প্রানীবিজ্ঞানের প্রতিটি পাঠ্য বইয়ে এই তত্ত্ব অন্তর্ভুক্ত থাকত না এবং বিশ্বের প্রায় সব উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এই তত্ত্ব পড়ানো হত না। ওয়েল, প্রথমত, বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন বিষয় পড়ানো হয় মানে এই নয় যে সেটি বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত সত্য। দ্বিতীয়ত, সারা বিশ্ব জুড়ে উদ্ভিদবিজ্ঞান ও প্রাণীবিজ্ঞানের প্রতিটি পাঠ্য বই যাচাই করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। ফলে পাঠ্য পুস্তকগুলোতে আসলে বিবর্তন তত্ত্ব সম্পর্কে কী লিখা আছে সেটা জানা প্রায় অসম্ভব। তবে এটুকু অন্তত নিশ্চিত করে বলা যায় যে পাঠ্য বইয়ে বিবর্তন তত্ত্বকে “বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত সত্য” হিসেবে পড়ানো হয় না। কোন পাঠ্য পুস্তকে এরকম কিছু লিখা থাকলে যে কেউ প্রমাণ হাজির করতে পারেন। তৃতীয়ত, কোন ডারউইনবাদী তার লিখিত বইয়ে এরকম কিছু দাবি করে থাকলেও বিবর্তন তত্ত্ব সত্য হয়ে যায় না।

৫. যারা বিবর্তন তত্ত্বের বিরোধিতা করেন তাদের অধিকাংশের ক্ষেত্রে নাকি মূল কারণটি বৈজ্ঞানিক নয়, বরং ধর্মীয় বিশ্বাস। এটি একটি মিথ্যাচার। কেউ কেউ অজ্ঞতাবশত ধর্মীয় বিশ্বাস থেকে বিবর্তন তত্ত্বের বিরোধিতা করতে পারেন, কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে বিবর্তন তত্ত্ব নিয়ে আমার লেখাতে প্রকৃতি থেকে ডজনেরও বেশী মৌলিক উদাহরণ উপস্থাপন করে যুক্তি দিয়ে দেখিয়ে দেয়া হয়েছে যে বিবর্তন তত্ত্বের আসলেই কোন ভিত্তি নেই। এ পর্যন্ত একজনও আমার যুক্তির বিপক্ষে পীয়ার-রিভিউড বৈজ্ঞানিক জার্নাল থেকে কোন প্রমাণ দেখাতে পারেনি। প্রমাণ থাকলে নিশ্চয় হাজির করা হতো। এরকম আরো অসংখ্য উদাহরণ উপস্থাপন করা সম্ভব যেগুলোর ক্ষেত্রে ধর্মীয় বিশ্বাসের কোনই প্রভাব নাই। অন্যদিকে ডারউইনবাদীরা যদি এগুলোর কোন একটি প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয় তাহলে বিবর্তন তত্ত্বকে ভুল হিসেবে স্বীকার করতে হবে। মজার ব্যাপার হচ্ছে তারা কোন একটি ক্ষেত্রেও নিরপেক্ষ হতে পারবেন না! প্রমাণ দেখাতে না পারলেও বিশ্বাস করতেই হবে!

এরকম উদাহরণ আরো আছে যেগুলোর ক্ষেত্রে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে অসচেতন লোকজনকে বিজ্ঞানের নামে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে।

বিবর্তন তত্ত্ব নিয়ে দশ পর্বের সিরিজ পড়ুন: প্রকৃতির বৈচিত্র্য: ডারউইনবাদীদের নাইটমেয়ার

Level 0

আমি এস. এম. রায়হান। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 12 বছর 10 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 27 টি টিউন ও 123 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

Level 0

well written, keep it up

বিবর্তনবাদের ও অনক বিবর্তন হয়েছে।